সম্প্রতি যোগ করলাম

Friday 17 April 2009

যদি আমি ঝরে যাই একদিন - জীবনানন্দ দাশ

যদি আমি ঝরে যাই একদিন
জীবনানন্দ দাশ

যদি আমি ঝরে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়;
যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষেতে ম্লান চোখ বুজে,
যখন চড়াই পাখি কাঁঠালিচাপাঁর নীড়ে ঠোঁট আছে গুজে,
যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে খয়েরি পাতায়,
যখন পুকুরে হাঁস সোঁদা জলে শিশিরের গন্ধ শুধু পায়,
শামুক গুগলিগুলো পড়ে আছে শ্যাওলার মলিন সবুজে-
তখন আমারে যদি পাও নাকো লালশাক-ছাওয়া মাঠে খুঁজে,
ঠেস্‌ দিয়ে বসে আর থাকি নাকো যদি বুনো চালতার গায়ে,

তাহলে জানিও তুমি আসিয়াছে অন্ধকার মৃত্যুর আহ্বান-
যার ডাক শুনে রাঙা রৌদ্রেরো চিল আর শালিখের ভিড়
একদিন ছেড়ে যাবে আম জাম বনে নীল বাংলার তীর,
যার ডাক শুনে আজ ক্ষেতে-ক্ষেতে ঝরিতেছে খই আর মৌরির ধান;-
কবে যে আসিবে মৃত্যু; বাসমতী চালে-ভেজা শাদা হাতখান-
রাখো বুকে, হে কিশোরী, গোরোচনারূপে আমি করিব যে ম্লান--

Read more...

চিঠি দিও - মহাদেব সাহা



চিঠি দিও
মহাদেব সাহা

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি দিও খামে
কিছুই লেখার নেই তবু লিখো একটি পাখির শিস
একটি ফুলের ছোট নাম,
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে কিছু হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো
করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
মিথ্যা করে হলেও বোলো, ভালবাসি"

Read more...

আমি কোনো আগন্তুক নই - আহসান হাবীব



আমি কোনো আগন্তুক নই
আহসান হাবীব

আসমানের তারা সাক্ষী
সাক্ষী এই জমিনের ফুল, এই
নিশিরাইত বাঁশবাগান বিস্তর জোনাকি সাক্ষী
সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী
পূবের পুকুর, তার ঝাকড়া ডুমুরের পালে স্থিরদৃষ্টি
মাছরাঙা আমাকে চেনে
আমি কোনো অভ্যাগত নই
খোদার কসম আমি ভিনদেশী পথিক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই, আমি
ছিলাম এখানে, আমি স্বাপ্নিক নিয়মে
এখানেই থাকি আর
এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা -
সারা দেশে।

আমি কোনো আগন্তুক নই। এই
খর রৌদ্র জলজ বাতাস মেঘ ক্লান্ত বিকেলের
পাখিরা আমাকে চেনে
তারা জানে আমি কোনো অনাত্মীয় নই।
কার্তিকের ধানের মঞ্জরী সাক্ষী
সাক্ষী তার চিরোল পাতার
টলমল শিশির, সাক্ষী জ্যোৎস্নার চাদরে ঢাকা
নিশিন্দার ছায়া
অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলী
তার ক্লান্ত চোখের আঁধার
আমি চিনি, আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন। আমি
জমিলার মা'র
শূন্য খা খা রান্নাঘর শুকনো থালা সব চিনি
সে আমাকে চেনে

হাত রাখো বৈঠায় লাঙ্গলে, দেখো
আমার হাতের স্পর্শ লেগে আছে কেমন গভীর। দেখো
মাটিতে আমার গন্ধ, আমার শরীরে
লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস।

আমাকে বিশ্বাস করো, আমি কোনো আগন্তুক নই।

দু'পাশে ধানের ক্ষেত
সরু পথ
সামনে ধু ধু নদীর কিনার
আমার অস্তিত্বে গাঁথা। আমি এই উধাও নদীর
মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

Read more...

দোতলার ল্যান্ডিং মুখোমুখি দুজন - আহসান হাবীব



দোতলার ল্যান্ডিং মুখোমুখি দুজন
আহসান হাবীব

মুখোমুখি ফ্ল্যাট
একজন সিঁড়িতে, একজন দরজায়

: আপনারা যাচ্ছেন বুঝি ?
: চলে যাচ্ছি, মালপত্র উঠে গেছে সব ।
: বছর দুয়েক হল, তাই নয় ?
: তারো বেশী । আপনার ডাক নাম শানু, ভালো নাম ?
: শাহানা, আপনার ?
: মাবু ।
: জানি ।
: মাহবুব হোসেন । আপনি খুব ভালো সেলাই জানেন ।
: কে বলেছে । আপনার তো অনার্স ফাইন্যাল, তাই নয় ?
: এবার ফাইন্যাল ।
: ফিজিক্স-এ অনার্স ।
: কী আশ্চর্য ! আপনি কেন ছাড়লেন হঠাৎ ?
: মা চান না । মানে ছেলেদের সঙ্গে বসে...
: সে যাক গে, পা সেরেছে ?
: কী করে জানলেন ?
: এই আর কি ! সেরে গেছে ?
: ও কিছুনা , প‌্যাসেজটা পিছলে ছিল মানে...
: সত্যি নয় । উচুঁ থেকে পড়ে গিয়ে...
: ধ্যাৎ । খাবার টেবিলে রোজ মাকে অতো জ্বালানো কি ভালো ?
: মা বলেছে ?
: শুনতে পাই । বছর দুয়েক হল, তাই নয় ?
: তারো বেশী । আপনার টবের গাছে ফুল এসেছে ?
: নেবেন ? না থাক । রিকসা এল, মা এলেন , যাই ।
: আপনি সন্ধ্যে বেলা ওভাবে কখনও পড়বেন না,
চোখ যাবে, যাই ।
: হলুদ শার্টের মাঝখানে বোতাম নেই, লাগিয়ে নেবেন, যাই ।
: যান, আপনার মা আসছেন ।
: মা ডাকছেন, যাই ।

Read more...

তোমার চোখ এতো লাল কেন - নির্মলেন্দু গুণ



তোমার চোখ এতো লাল কেন
নির্মলেন্দু গুণ

আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে , আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য ।
বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত ।


আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ আমাকে খেতে দিক । আমি হাতপাখা নিয়ে
কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছি না,
আমি জানি, এই ইলেকট্রিকের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে স্বামী -সেবার দায় থেকে ।
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক :
আমার জল লাগবে কি না, নুন লাগবে কি না,
পাটশাক ভাজার সঙ্গে আরও একটা
তেলে ভাজা শুকনো মরিচ লাগবে কি না ।
এঁটো বাসন, গেঞ্জি-রুমাল আমি নিজেই ধুতে পারি ।


আমি বলছি না ভলোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা
খুলে দিক । কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক ।
কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক : 'তোমার চোখ এতো লাল কেন ?'

Read more...

কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি - মাহবুব উল আলম চৌধুরী



কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি
মাহবুব উল আলম চৌধুরী

যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে চেয়েছে
তাদের জন্য আমি ফাঁসি দাবি করছি।
যাদের আদেশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের জন্য
ফাঁসি দাবী করছি।
ফাঁসি দাবী করছি যারা এই মৃতদেহের ওপর দিয়ে
ক্ষমতার আসনে আরোহণ করেছে
সেই বিশ্বাসঘাতকদের জন্যে।
আমি তাদের বিচার দেখতে চাই
খোলা ময়দানে সেই নির্দিষ্ট জায়গাতে
শাস্তিপ্রাপ্তদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায়
আমার দেশের মানুষ দেখতে চায়।

ওরা চল্লিশজন কিংবা আরও বেশি
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে,রসনার রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায়
ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য, বাংলার জন্য
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য
আলাওলের ঐতিহ্য
কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের
সাহিত্য ও কবিতার জন্য
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
পলাশপুরের মকবুল আহমদের
পুঁথির জন্য, রমেশ শীলের গাঁথার জন্য
জসীমউদ্দীনের সোজন বাঁধিয়ার ঘাটের জন্য
যারা প্রাণ দিয়েছে
ভাটিয়ালি বাউল কীর্তন গজল
নজরুলের ‘খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি
আমার দেশের মাটি’।

হে আমার মৃত ভাইরা,
সেইদিন নিস্তব্ধতার মধ্য থেকে তোমাদের কণ্ঠস্বর
স্বাধীনতার বলিষ্ঠ চিৎকার
ভেসে আসবে
সেইদিন আমাদের দেশের জনতা
খুনি জালিমকে ফাঁসির কাষ্ঠে
ঝুলাবেই ঝুলাবে
তোমাদের আশা অগ্নিশিখার মতো জ্বলবে
প্রতিশোধ এবং বিজয়ের আনন্দে।

সময়কালঃ
ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা
চট্টগ্রাম, সন্ধ্যা সাতটা, একুশে ফেব্র“য়ারি, ১৯৫২।

Read more...

প্রস্থান - হেলাল হাফিজ



প্রস্থান

হেলাল হাফিজ

এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পএ দিও

এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালীর তাল পাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পএ দিও।
ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পএ দিও।
কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে
কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে
পএ দিও, পএ দিও।

আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেও, আপত্তি নেই।
গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?
আমি না হয় ভালবাসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,
নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে
পাঁচ দুপুরে নির্জনতা খুন করেছি, কি আসে যায়?
এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,
এক মানবী কতোটা বা কষ্ট দেবে!

Read more...

উল্লেখযোগ্য স্মৃতি - নির্মলেন্দু গুণ



উল্লেখযোগ্য স্মৃতি

নির্মলেন্দু গুণ

আমার ভালোবাসা কিংবা প্রেম-সংক্রান্ত
কোনো স্মৃতি নেই, যাকে ঠিক ভালোবাসা
কিংবা প্রেম বলা যায়।

একদিন টুকুদি নাকের ডগার বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখে
বলেছিল : তোর বউ তোকে খুব ভালবাসবে দেখিস।
সে-ই আমার প্রেম, সেই আমার সর্বপ্রথম কল্পনায়
রমনীয় ভালোবাসা পাওয়া, হঠাৎ যৌবন-ছোঁয়া
কিশোর প্রথম প্রণয়। আর কোনো স্মৃতি নেই।

একদিন নখ কাটতে কাটতে আঙুল কেটে গেলে
প্রেমের শিশির হয়ে রক্ত ঝরেছিল,
ডেটলে রক্তাক্ত ক্ষত ধুয়ে মুছে দিয়ে পূরবী বলেছিল,
আমি তার চিরকালের
শত্রু
আমি আজও শত্রু-মিএ তফাৎ বুঝি না।
নিজের
শত্রু হয়ে আমি আজ ও অপেক্ষমাণ,
ঘুরেফিরে স্মৃতির সমুখে এসে এখনো দাঁড়াই।

আমার এ ছাড়া ভালোবাসা কিংবা প্রেমের কাছাকাছি
আর কোনো স্মৃতি নেই, সে-ই আমার প্রেম,
অদ্যবধি সেই আমার পুণ্য ভালবাসা!

আমার একাকী যাএা, জীবনের নিঃসঙ্গতা বুঝে
সদ্যবিবাহিতা আমারই সহোদরা
সিঁথিতে রঙিন চাঁদ মেখে একদিন
শিয়রের কাছে বসেছিল : চল কঁদিন আমার বাড়ি,
সমুদ্রের হাওয়ায় কাঁটাবি।

আমি জানি আজো সেই সমুদ্র্রের হাওয়া,
আজো সেই একমাএ ভালবাসা স্মৃতি,
আজো সেই মুহূর্তের প্রেম।

আমার ভালোবাসা কিংবা প্রেম-সংক্রান্ত
আর কোনো স্মৃতি নেই।

Read more...

তুমি ডাক দিলে - হেলাল হাফিজ


তুমি ডাক দিলে

হেলাল হাফিজ

একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার।

তুমি ডাক দিলে
নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে
শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো
পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব
পথে এতোটুকু দেরিও করবো না।
তুমি ডাক দিলে
সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো,
তুমি রাজি হলে
যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো।

একবার আমন্রণ পেলে
সব কিছু ফেলে
তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল,
অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে
লোকালয়ে থাকবো না আর
আমরণ পাখি হয়ে যাবো, -খাবো মৌনতা তোমার

Read more...

শুধু তোমার জন্যে - নির্মলেন্দু গুণ


শুধু তোমার জন্যে

নির্মলেন্দু গুণ

তোমাকে স্পর্শ করতে গিয়েও কতবার যে আমি
গুটিয়ে নিয়েছি হাত, সে-কথা ঈশ্বর জানেন
তোমাকে আমার ভালবাসার কথা বলতে গিয়েও
কতবার যে বলিনি, সে-কথা আমার ঈশ্বর জানেন।

তোমার হাতের মৃদু কড়া-নাড়ার শব্দ শুনার জন্য
দরোজার সঙ্গে চুম্বকখন্ডের মতো আমার কর্ণযুগলকে
গেথে রেখেছিলাম। কোনো নির্জর্ন মধ্যরাতে তুমি এসে
ডেকে বলবেঃ এই যে ওঠো, আমি এসেছি, আ-মি।
আর আমি এ-কী শুনলাম, এ-কী শুনলাম এমৎ উল্লাসে
নিজেকে ছুঁড়ে দিচ্ছি তোমার উদ্দেশ্যে- ঠিক এরকম
একটি দৃশ্যের কথা কতবার যে আমি মনে-মনে
কল্পনা করছি, সে-কথা শুধু আমার ঈশ্বর জানেন।

আমার ঈশ্বর জানেন, আমার চুল পেকেছে তোমার জন্য
আমার ঈশ্বর জানেন, আমার জ্বর এসেছে তোমার জন্য
আমার ঈশ্বর জানেন, আমার মৃত্য হবে তোমার জন্য।
তারপর ঐ ঈশ্বরের মতো কোনো একদিন তুমিও জানবে
আমি জম্মেছিলাম তোমার জন্য, শুধুই তোমার জন্য।

Read more...

যাত্রা-ভঙ্গ - নির্মলেন্দু গুণ


যাত্রা-ভঙ্গ

নির্মলেন্দু গুণ

হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তাকে,
মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না;
এককে করি দুই।

হেমের মাঝে শুই না যবে
প্রেমের মাঝে শুই।
তুই কেমন করে যাবি?
পা বাড়ালে পায়ের ছায়া,
আমাকে তুই পাবি।

তবু ও তুই বলেস যদি যাই
দেখবি তোর সম্মখে পথ নাই।
তখন আমি একতু ছোব
হাত বাড়িয়ে জড়াব তোর
বিদায় দুটি পায়ে,
তুই উঠবি আমার নায়ে
আমার বৈতরণী নায়ে।

নায়ের মাঝে বসব বটে,
না-এর মাঝে শোধ;
হাত দিয়ে তো ছোঁব।

তুই কেমন করে যাবি?

Read more...

নিরুদ্দেশ যাত্রা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নিরুদ্দেশ যাত্রা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


আর কতদুরে নিয়ে যাবে মোরে
হে সুন্দরী?
বলো, কোন পার ভিড়িবে তোমার
সোনার তরী
যখনই শুধাই, ওগো বিদেশীনি,
তুমি হাস শুধু, মধুরহাসিনী-
বুঝিতে না পারি, কি জানি কি আছে
তোমার মনে।
নীরবে দেখাও অঙ্গুলি তুলি
অকুল সি উঠিছে আকুলি,
দুরে পশ্চিমে ডুবিছে তপন
গগনকোণে।
কি আছে হেথায়- চলেছি কিসের
অন্বেষণে?

বলো দেখি মোরে, শুধাই তোমায়
অপরিচিতা-
ওই যেথা জ্বলে স্যার কুলে
দিনের চিতা,
ঝরিতেছে জল তরল অনল,
গলিয়া পড়িছে অম্বরতল,
দিকবধু যেন ছলছল আঁখি
অশ্রুজলে,
হোথায় কি আছে আলয় তোমার
র্উমিমুখর সাগরের পার
মেঘচুম্বিত অস্তগিরির
চরণতলে?
তুমি হাস শুধু মুখপানে চেয়ে
কথা না ব'লে।

Read more...

বন্ধুরা সব

  © E-BINODON is part of ebinodon.com E-BINODON NETWORK ebinodon.com 2008

Back to TOP